স্পোর্টস ডেস্ক: নাটকের পর নাটক। গত এক সপ্তাহ ধরে নেইমারের ট্রান্সফার নিয়েই গোটা বিশ্বে খরচ হয়েছে বহুমূল্য নিউজপ্রিন্ট। অনেকেরই মনে হয়েছিল, প্যারি সাঁজাঁ থেকে বার্সেলোনা যাওয়া তার কাছে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। ব্রাজিলিয়ান তারকাটিকে দলে পাওয়ার জন্য একাধিক প্রস্তাব দিয়েছিল কাতালন ক্লাবটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো প্রস্তাবেই পিএসজি রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নেইমারের আর দলবদল হল না। এবার দেখার, অনিচ্ছুক ঘোড়া’র থেকে কীভাবে সেরা পারফরম্যান্স নিংড়ে নিতে পারেন পিএসজি কোচ টমাস টুচেল।
দু’বছর আগে ২২২ মিলিয়ন ইউরো বাই-আউট ক্লজ মিটিয়ে বার্সেলোনা থেকে নেইমারকে নিয়েছিল পিএসজি। ক্লাব প্রেসিডেন্ট নাসের আল খালেফি ভেবেছিলেন, তাকে পেলে দল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠবে। কিন্তু চোট পেয়ে দু’টি মরশুমেই আশাপ্রদ সার্ভিস দিতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকারটি। শোনা যায়, জাতীয় দলে তার সহ-ফুটবলার ড্যানি আলভেসের প্ররোচনায় বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজি’তে এসেছিলেন নেইমার।
এখন আলভেস প্যারিস ছেড়ে সাও পাওলোয় গেছেন। তাই সুগন্ধের শহরে আর মন বসছে না হুল্লোড়প্রিয় নেইমারের। এছাড়া তিনি এটাও বুঝতে পেরেছেন যে, পিএসজি’তে থাকলে তার পক্ষে বিরাট কিছু করা সম্ভব নয়। মধ্যম মানের দলের সেরা ফুটবলার হয়েই নেইমারকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তাই গত মরশুমের শেষ থেকেই বার্সেলোনা ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনি। মেসি ও লুই সুয়ারেজের সঙ্গে এখনো বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট। আর্জেন্টাইন মহাতারকাটির স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজোর সঙ্গে নেইমারের বান্ধবীর সখ্যতা রয়েছে। বার্সেলোনায় তারা একই পাড়ার বাসিন্দা। তাই স্ত্রীর জন্যই নেইমারকে বার্সেলোনায় ফেরানোর জন্য বাড়তি দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু পিএসজি তাদের আর্থিক চাহিদা থেকে না সরায় তার ইচ্ছে বাস্তবায়িত হলো না। এখন বার্সেলোনা বলছে, আগামী মরশুমে অর্থাৎ ২০২০-২১’এ নেইমারকে তারা দলে নেবে।
গত মঙ্গলবার বার্সেলোনার প্রতিনিধিদল প্যারিসে পৌঁছে কথা বলে পিএসজি’র শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে। সেখানে বার্সার ফুটবল ডিরেক্টর এরিক আবিদালের প্রস্তাব ছিল, নেইমারের জন্য প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করতে প্রস্তুত তারা। তবে তা যদি একান্তই পিএসজি মেনে না নেয় তখন ওসুমানে ডেম্বেলে কিংবা ইভান র্যাকিটিচকে পাঠানো হতে পারে প্যারিসে। বার্সেলোনার কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দের সঙ্গে আলোচনা ইতিমধ্যেই সেরে নিয়েছেন ডিরেক্টর অব ফুটবল এরিক আবিদাল। কিন্তু ডেম্বেলে কিছুতেই তার দেশের ক্লাবে খেলতে চান না। পাশাপাশি র্যাকিটিচ চার বছরের চুক্তির জন্য বলেছিলেন পিএসজি’কে। প্যারিসের ক্লাবটি তাতে রাজি হয়নি। বরং তারা শেষ পর্যন্ত নেইমারকে বিক্রির জন্য ২২২ মিলিয়ন ইউরোই চায় বার্সেলোনার থেকে। কিন্তু এই মুহূর্তে এত অর্থ খরচ করতে চাননি কাতালান ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ বার্তোমেউ।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ক্রমাগত এই নাটকের ফলে আখেরে ক্ষতি হলো দুই ক্লাবের। বার্সায় ফিরতে না পেরে নেইমার পিএসজি’কে তার সেরাটা উজাড় করে দেবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। পাশাপাশি র্যাকিটিচ বুঝে গেলেন যে, বার্সেলোনায় তিনি আর অটোমেটিক চয়েস নন। এরপর তার পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়তেই পারে।